ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা ও মনিটাইজেশন পাওয়ার নিয়ম

ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা। আসসালামু আলাইকুম। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন আজকের আলোচনা সাজিয়েছি ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা সম্পর্কে ইতিমধ্যে youtube এর মতো ফেসবুকেও নিয়ে এসেছে ভিডিও প্লাটফর্ম এবং ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে এসব প্লাটফর্ম মানুষের এখন নিত্যদিনের সঙ্গে নাচ গান নাটক সিনেমা দেখা সহ তাদের অবসর সময় পার করে থাকে আমরা যা দেখি সেই সকল ভিডিও কারা আপলোড করে কেনই বা এগুলো আপলোড করে থাকে সে বিষয়ে একদম পরিষ্কার করে আলোচনা করব আজকে।

ফেসবুক থেকে যারা টাকা আয় করতে চান তাদের মনে একটি কমন প্রশ্ন ফেসবুকে কত ভিউতে কত টাকা দেয়। আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে ফেসবুকে একশ ভিউ কত টাকা দেয়, এক মিলিয়ন ভিউ কত টাকা দেয় পরিষ্কার করে বোঝানোর চেষ্টা করবো আপনাদেরকে। এজন্য আপনাদের কাছে আগে থেকে আমি বলে রাখি অবশ্যই মনোযোগ সহকারে আমাদের এই ফেসবুক কত  ভিউতে কত টাকা দেয় পোস্টটি শুরু থেকে একদম শেষ পর্যন্ত পড়বেন। এবং আপনাদের কাছে যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধু-বান্ধব এর কাছে এই পোস্টটি শেয়ার করে দিবেন। তাহলে আর বেশি দেরি না করে এখনি চলুন দেখে নেওয়া যাক ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা এর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

ফেসবুক  মনিটাইজেশনের জন্য শর্ত

ফেসবুকে মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য ফেসবুকের কিছু শর্ত রয়েছে যেগুলো পূরণ করতে হবে। তবে ফেসবুকে মনিটাইজেশন এর পাওয়ার জন্য উপযুক্ত হবে সকল কিছু ঠিকঠাক থাকলে আবেদন করার পর ফেসবুক  কর্তৃপক্ষ মনিটাইজেশন এনাবল করে দিবে। ফেসবুকে মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য নিচে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে।

1. ফেসবুক পেজ হতে হবে।

2. ফেসবুক পেজে ৫০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে।

3. কমপক্ষে পাঁচটি ভিডিও থাকতে হবে।

4. গত ৬০ দিনের মধ্যে ৬ লক্ষ মিনিট ওয়াচ টাইম থাকতে হবে।

ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা

ফেসবুক কত হতে কত টাকা এটি একটি অনেক কঠিন একটি প্রশ্ন। কেননা একেক জন একেক পরিমাণ টাকা পেয়ে থাকে ফেসবুক থেকে। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে ভিডিও কিওয়ার্ড ও ভিডিও লোকেশন এর ওপর। আপনার ভিডিওটি যদি হাই সিপিসি কি ওয়ার্ড হয় তাহলে কিন্তু আপনি অল্প ভিউতে ভালো পরিমান টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আবার অন্যদিকে আপনার ভিডিও যদি উন্নত দেশে ভিউ হয় যেমন-  যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, ইত্যাদি তাহলে কিন্তু আপনার ভিডিওতে অল্প যেহেতু ভালো পরিমান টাকা পাবেন। আর যদি আপনার ভিডিও বাংলাদেশ বা ভারতে বেশি ভিউ হয় তাহলে কিন্তু আপনি বেশি পরিমাণ বেশি ভিউতে তেমন বেশি টাকা পাবেন না।

অল্প পরিমাণ টাকা পাবেন আপনি এইসব দেশে যদি ভিউ হয়। তবে ফেসবুক ব্যবহারকারী অনেক বেশি হওয়ায় খুব বেশি পরিমাণ ভিডিও ভাইরাল হয়। ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল করতে পারলে তুলনামূলক ইনকাম কম থাকলেও ভিডিও ভাইরাল হলে ভালো পরিমাণ ইনকাম করা যায়। অনেকের কাছে শুনেছি যারা ইতিমধ্যে ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল করে টাকা ইনকাম করে যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ থেকে প্রতি এক হাজার ভিউতে আপনি ০৭ থেকে  ১০ টাকা করে পাবেন। তবে আপনার ভিডিও যদি মানুষ অনেক লম্বা সময় দেখে থাকে তাহলে আপনার ইনকাম আরো বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা লম্বা ভিডিও বেশি সময় দেখলে ভিডিওতে বেশি পরিমাণে অ্যাড আসবে আর তত বেশি ইনকাম হবে।

ফেসবুক কেন টাকা দেয়

ফেসবুক কত ফিউতে কত টাকা দেয় সেটি জানার আগে আমাদের জানা উচিত ফেসবুক কেন টাকা দেয়। আমি এখন আপনাদেরকে পরিষ্কার করে বুঝানোর চেষ্টা করব, যখন আপনি ফেসবুকের ভিডিও দেখেন তখন খেয়াল করলে দেখবেন অনেক ভিডিওতে ভিডিওর মাঝখানে অ্যাড আসে। সাধারণত আমরা যখন বাংলাদেশ থেকে ফেসবুকে ভিডিও দেখি সে সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানির এড আমাদের ভিডিওতে ফেসবুক কোম্পানি দেখায়। এই অ্যাড ফেসবুক ভিডিওতে দেখানোর জন্য যে কোম্পানির এড আমরা ভিডিওতে দেখি সেই কোম্পানি ফেসবুককে টাকা দেয়, তাদের ফেসবুক কোম্পানির ভিডিওতে অ্যাড দেখানোর জন্য। আর এই এড যার ভিডিওতে দেখায় ফেসবুক কোম্পানি তাকে টাকা দিয়ে থাকে। ফেসবুক কোম্পানি এই এড সবার ভিডিওতে দেখাবে না শুধুমাত্র মনিটাইজেশন যেসব পেজে রয়েছে সেসব পেজে এই অ্যাডগুলো আসবে। এবং তার মাধ্যমেই সেই ভিডিওর মালিক টাকা পাবে।

 ফেসবুক থেকে আয় করার সেরা কয়েকটি উপায়

আমি আপনাদেরকে আগেও বলেছি যে, ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা  অতটা সহজ নয়। তবে ইন্টারনেট থেকে কিছু প্রমাণিত উপায় রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে আপনি চাইলে ফেসবুক থেকে দৈনিক ৫০০ বা তারও বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যা বর্তমানে অনেকেই করছে, ফেসবুকে অনলাইন আয়ের মাধ্যম বানিয়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে নিচের ফেসবুক থেকে ইনকামের উপায় গুলো অনুসরণ করুন। তাহলে এখনই চলুন নিচে থেকে দেখে নেওয়া যাক ফেসবুক থেকে আয় করার সেরা কয়েকটি উপায় গুলো।

 ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে ইনকাম

আপনারা হয়তো অনেকেই ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এর ব্যাপারে জেনেছেন। ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি যেকোনো প্রোডাক্ট সার্ভিস বা অফারে নির্দিষ্ট পাবলিশ করে লোকদেরকে দেখাতে পারবেন। যা একটি অনলাইন শপিং ওয়েবসাইটের মতোই কাজ করে থাকে। যেখানে ফেসবুক অ্যাকাউন্টধারি যেকোনো ব্যক্তি নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস অনলাইনে পাবলিশ ডিসপ্লে করে এর দ্বারা টাকা ইনকাম করতে পারেন। সহজ কথা আপনি কি কোন পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করতে চান, তাহলে ঘরে বসে ফেসবুক মার্কেট পেলস এর মাধ্যমে সেই পণ্য বা পরিষেবার বিস্তারিত তথ্য লাখ লাখ মানুষকে ডিসপ্লে করে জানিয়ে দিতে পারেন।

এবং তা বিক্রি করতে পারেন। এরপর আপনার দেওয়া ডিসপ্লে তথ্য মতে যদি কেউ সেই পন্য কিনতে আগ্রহী হয়, তাহলে সে আপনাকে ফেসবুক অথবা মেসেঞ্জারে মাধ্যমে আপনার সাথে কন্টাক করবে। তারপর আপনার এবং কাস্টমারের সমন্বয়ে পণ্যটি ঘরে বসে বিক্রি করতে পারবেন। যত দিন যাবে আপনার কাস্টমার তত বেশি হতে থাকবে। এতে করে আপনার ইনকামও বাড়তে থাকবে।

 ফেসবুক পেজ বিক্রি করে ইনকাম

ফেসবুক পেজের বর্তমানে অনেক চাহিদা রয়েছে। এমন অনেক ব্লগার বা ইউটিউবার রয়েছে যারা তাদের সাইট বা চ্যানেল উন্নতির বা প্রমোশনের জন্য ফেসবুক পেজ কিনে থাকেন। আর ফেসবুক পেজটি যদি ভালো সংখ্যায় লাইক থাকে তাহলে আপনি সেই পেজ থেকে ভালো দামে বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারেন। আপনার ফেসবুক পেজটি বিক্রির জন্য আপনি আপনার পেজে ফেসবুকে সংক্রান্ত একটি পোস্ট করতে পারেন, অথবা ফেসবুকের মধ্যে আপনি পোস্ট দিতে পারেন। যদি কেউ আপনার পেজ কিনতে আগ্রহী হয় তাহলে সে আপনাকে ডাইরেক্ট ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবে। এবং আপনি ঘরে বসেই ফেসবুক পেজ বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন

ফ্রিল্যান্সিং করে ফেসবুকে আয় করুন

আপনি যদি কোন বিশেষ কাজের একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার অভিজ্ঞতার কাজটি করে আপনি প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন হতে পারে কে কাজ দিবে? আপনার  যেই কাজটির অভিজ্ঞতা রয়েছে সেই কাজের সাথে জড়িত ফিন্যান্সিং গ্রুপ প্রচুর রয়েছে। আপনি চাইলে সেই গ্রুপে গিয়ে আপনার কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার বিষয়ে সেখানে শেয়ার করতে পারেন। এতে করে গ্রাহকরা আপনার সাথে কমেন্ট এবং ডাইরেক্ট সেটিং এর মাধ্যমে কথা বলবে। এবং কাজের চুক্তি করে নিতে পারবেন। যদি কোন ব্যক্তি আপনার কাছ থেকে কাজ করিয়ে নিতে আগ্রহী হয় তাহলে আপনি তাকে ফিনল্যান্সিং পরিষেবা প্রদান করার মাধ্যমে টাকা ইনকামের সুযোগ পাচ্ছেন।

আর যদি আপনার কোন কাজের তেমন অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে চিন্তার কারণ নেই ইউটিউব এর মাধ্যমে নিজের পছন্দমত যে কোন বিষয়ে একদম ফ্রিতে কাজ শিখে নিতে পারেন। আপনি দুই থেকে চার মাস সময় ব্যয় করে লোগো ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, কন্টেন্ট রাইটিং বা অন্যান্য বিষয়ে শিখে নিতে পারবেন। তারপর যখন নিজেকে সম্পূর্ণ অভিজ্ঞ হিসেবে দাঁড় করাতে পারবেন তখন ফেসবুক ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো খুঁজতে ও সেগুলির সমাধান করার মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং করার লাভ ও সুবিধা

এখন আমরা আপনাদের মাঝে ফিনল্যান্সিং করার লাভ ও সুবিধা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করব।

1. যে কোন সময় যেকোনো জায়গার থেকে কাজ করা যায়।

2. ফেসবুক কমেন্ট এবং সেটের মাধ্যমে সহজেই গ্রাহকদের সাথে কথা বলা যায়।

3. ফেসবুক গ্রুপ এবং পেজগুলোর সাহায্যে খুব  সহজেই গ্রাহক পাওয়া যায়।

4. সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করার পর সাথে সাথেই পেমেন্ট পাওয়া যায়।

5. ফিনল্যান্সিং জগতে আপনি নিজেই নিজের  মালিক।

ফেসবুকে ইনকাম বৃদ্ধি করার উপায়

এখানে আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে আপনাদের কিছু টিপস দেব, যার মাধ্যমে আপনি ফেসবুক থেকে ইনকাম বৃদ্ধি করতে পারবেন। আশা করি নিচের টিপস গুলো আপনি যদি ফলো করেন তাহলে অবশ্যই আপনার ফেসবুক পেজের ইনকাম আসবে।

1. আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত রুটিন করে ভিডিও আপলোড করতে হবে।

2. ভিডিও কোয়ালিটি  দিন দিন বৃদ্ধি করতে হবে।

3. পেজের ফলোয়ার বৃদ্ধি করতে হবে। (সোশ্যাল মিডিয়াতে একটিভ থাকতে হবে, কমেন্টের রিপ্লাই দিতে হবে এবং পেইড মার্কেটিং করতে হবে )।

4. ভেন্ডিং তৈরি করার জন্য ইউটিউব সহ অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন ও নিয়মিত পোস্ট করুন।

আপনারা তাহলে বুঝতে পেরেছেন ফেসবুকে ইনকাম বৃদ্ধি করার উপায় সম্পর্কে।

 ফেসবুক ভিডিওতে কিভাবে ইনকাম হয়

এখন জানবো আমরা ফেসবুক ভিডিওতে কেন টাকা দেবে। ফেসবুক ভিডিওগুলো যত ভাইরাল হবে তত ইনকাম হবে। এর উত্তরে বলতে চাই, যে ভিডিও আপনি দেখেন তাতে দেখবেন যে হঠাৎ ভিডিও চলতে চলতে বিজ্ঞাপন দেখায় আর এই বিজ্ঞাপন আপনি যখন দেখবেন তখন ওই কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের ইনকাম হবে। কোম্পানি বিজ্ঞাপন দাতা ফেসবুকে যত টাকা প্রদান করবে বিজ্ঞাপনের জন্য তার থেকে কিছু অংশ কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে দেয়। ওই সকল কোম্পানিগুলো যদি বেশি পরিমাণে বিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকে প্রদান করে সে ক্ষেত্রে আপনাকেও ফেসবুক বেশি টাকা দিবে। এর নির্দিষ্ট পরিমাণ বলা যাবে অনলাইন ইনকামের ক্ষেত্রে। তবে প্রতিনিয়ত ভিডিও আপলোড করলে আশা করা যায় ভালো আর্নিং করা  যাবে।

 ফেসবুকে এক মিলিয়ন ভিউতে কত টাকা

অনেকেই এই প্রশ্ন করে থাকেন ফেসবুকে ১ মিলিয়ন ভিউতে কত টাকা। একটা ভিডিওতে মিলিয়ন ভিউ হওয়া মানে, অবশ্যই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে থাকবে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে কিন্তু ইনকাম তুলনামূলক একটু বেশি হয়। এই নিয়মটি ইউটিউব এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ইউটিউবেও ভাইরাল ভিডিওতে ইনকাম বেশি হয়। যদি আমরা উপরে প্রতি এক হাজার টাকা হিসাব করি তাহলে ৭০০০০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাবে। তবে আমি আগেই বলেছি যে ভাইরাল ভিডিওতে ইনকাম বেশি হয়, এটি আমি একটি আনুমানিক হিসেবে আপনাদের  সামনে পেশ করলাম।

আশা করি ফেসবুক কত ভিউ কত টাকা পোস্টে আপনার কাছে ভালো লেগেছে। আমি এই পোষ্টের মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এই সম্পর্কিত বিষয় পরিষ্কারভাবে বোঝানোর জন্য। আপনারা যদি মনোযোগ সহকারে আমাদের এই পোস্টটি শুরু থেকে যদি একদম শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন, তাহলে আপনি উপরের এই পোস্টটি সম্পর্কে ভালভাবে জেনে এবং বুঝে গেছেন।