ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয়, এর ব্যবহার ও খাওয়ার নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজ আমরা আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে। আর ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধবদেরকে শেয়ার করে পাঠিয়ে দিবেন। চলুন তাহলে পোস্টটি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। আজকের পোস্টটি হল ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি  হয়। 

আমাদের দেহের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল কি কি উপকার এবং কি কি ক্ষতি করে সেই সম্পর্কিত সকল তথ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই পোস্টটি। আপনারা আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে। আর ভিটামিন ই ক্যাপসুল গ্রহণ করলে শরীরে কি হয় সেই সম্পর্কেও আপনাদের জানিয়ে দিব। তাই আপনি যদি জানতে চান ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয় সেই সম্পর্কে তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে দেখে নেওয়া যাক ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয় এবং তার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি ক্ষতি হয়

যে কোন ক্যাপসুল যদি আপনি নিয়ম অনুযায়ী গ্রহণ করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার কোন রকম অসুবিধা দেখা দিবে না। আর ওই ক্যাপসুলকে যদি আপনি আপনার ইচ্ছামত গ্রহণ করেন তাহলে নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিক তেমনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করে থাকেন সেই ক্ষেত্রে আপনার কোন ক্ষতি হবে না। আর যদি আপনি ডাক্তারের কথা না শুনে নিজের ইচ্ছা মত ভিটামিন ই ক্যাপসুল গ্রহণ করেন সেক্ষেত্রে আপনার মাথা ঘুরানো, মাথা ব্যাথা, প্রচন্ড পেট ব্যাথা হতে পারে, মাঝে মাঝে বমি হতে পারে, চোখের দৃষ্টিশক্তি ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে, দুর্বলতা এবং ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী যদি ভিটামিন ই ক্যাপসুল সেবন করেন সে ক্ষেত্রে আপনার কোন প্রকার কোন ক্ষতি দেখা দিবে না।

কখন ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেতে হয়

আপনাদের যাদের এক সময় ত্বক অনেক সুন্দর ছিল কিন্তু এখন তা অমসৃণ হয়ে গেছে, এবং বাইরের এই সূর্যের রোদের বা পলিশন এর কারণে আপনাদের ত্বকের জেল্লা হারিয়ে ফেলেছেন। সেক্ষেত্রে আপনি খুব সহজে ত্বকের উচ্চতা বাড়াতে পারবেন যদি আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করেন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করার জন্য আপনাদের যা যা করতে হবে সেগুলো হলো-

প্রথমে বাজার থেকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিনে বাড়িতে এসে সেখান থেকে দুই ফুটো ই ক্যাপসুল বের করে ক্যাপসুলের ভিতরে যে  তরল পদার্থ থাকবে একটি পাত্রে সেটা ঢেলে নিবেন। তার সাথে পরিমাণ মতো কয়েক চামচ অলিভ অয়েল মিশ্রিত করবেন। তারপর এই দুটি মিশ্রণ একসাথে করে আপনার সেই খসখসে ত্বকের উপর সুন্দর করে মালিশ করে নিবেন। কয়েকদিন এভাবে করলে দেখবেন আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়তেছে। আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ডাক্তারের পরামর্শ হয়ে গ্রহণ করতে পারেন। কেননা একটি ডাক্তারের কাছে যখন আপনি যাবেন আপনাকে তখন ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার এবং কখন সেবন করতে হবে আপনাকে সেই সম্পর্কে জানিয়ে দিবে। তাই অবশ্যই আপনারা ভিটামিন ই ক্যাপসুল ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে গ্রহণ করবেন।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল বেশি খেলে কি ক্ষতি হতে পারে

ভিটামিন ই  ক্যাপসুলটি আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। নানা ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে ভিটামিন ই এর অভাবে। এখন আপনাদের জানাবো ভিটামিন ই ক্যাপসুল বেশি খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে। চলুন সেই সম্পর্কে তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

পরিমাণ মতো আমাদের ভিটামিন ই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু ভিটামিন ই যদি আমরা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করে থাকি তাহলে সে ক্ষেত্রে কিন্তু আমাদের শরীরে অনেক ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। অনেক সময় আপনারা ডাক্তারের পরামর্শ না অনুযায়ী নিজের ইচ্ছামত এই ভিটামিন ই ক্যাপসুলটি সেবন করে থাকেন। যার ফলে আপনাদের নানান ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার

কিভাবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করবেন সেই সম্পর্কে আপনাদের এখন বিস্তারিত জানাবো। চলুন তাহলে নিচে থেকে দেখে নেওয়া যাক ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার গুলো।

1. মুখের ব্রণ কমাতে: যদি আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে মুখের ব্রণ কমাতে চান তাহলে ক্যাপসুলের ভিতরে থাকা জেলটা ব্রনের উপরে লাগিয়ে দিন এর কিছুক্ষণ পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

2. চুল বাড়াতে: যদি আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহারে চুল লম্বা করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে যা যা করতে হবে তা হল, নারীকেল তেলের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুলটি মিশিয়ে আধা ঘন্টার মত মেসেজ করবেন ভালোভাবে। সে ক্ষেত্রে অনেক দ্রুত আপনার চুল বেড়ে যাবে।

3. নখ এর উজ্জ্বলতা: যদি আপনি নখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ভিটামিন ই ক্যাপসুলটি গরম পানির মধ্যে দিয়ে সেই পানিতে আঙ্গুল ডুবিয়ে রাখতে হবে। কিছুদিন এই কাজ যদি করতে পারেন তাহলে আপনার নখের অনেক উপকার হবে।

4. হাত পায়ের উজ্জ্বলতা বাড়াতে: যদি আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে হাত পায়ের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মধু এবং লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে ভালোভাবে ব্যবহার করতে হবে। কিছুদিন করার পর দেখবেন আপনার হাতটা পায়ের উজ্জ্বলতা অটোমেটিক বাড়তেছে।

5. ঠোঁট ফাটা কমাতে: যদি আপনি ঠোঁট ফাটা কমাতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ঠোঁটে লাগাতে হবে। কিছুদিন ব্যবহার করার পর দেখবেন আপনার ঠোঁট ফাঁটা কমে গেছে।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল সরাসরি মুখে মাখছেন এতে কি হতে পারে

শরীরে নানা উপকার করে ভিটামিন ই ক্যাপসুল। হাড়ের যত্ন নেয়, বার্ধক্যের প্রভাব কমায়, বদ্ধত্বের সমস্যা রোধ করে। পাশাপাশি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকেরও উপকার করে থাকে। খাবার থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ই শরীরে গেলে এই উপকারগুলি হয়। আর যদি আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুলটি ভেঙে ভিতরে তরলটি মুখে যদি মাখেন সে ক্ষেত্রে কি হবে? সে সম্পর্কে এখন বিস্তারিত জানাবো।

 যদি আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে তার নির্যাসটি ত্বকে মাখলেও নানা ধরনের সমস্যা ধরে হতে পারে। যেমন যাদের ব্রণের সমস্যা রয়েছে, তারা যদি এই ভিটামিন ই ক্যাপসুলের তরল মুখে মাখে সেক্ষেত্রে কিন্তু তাদের সমস্যা দূর হতে পারে। ভিটামিন ই ত্বকের জন্য স্বাস্থ্যকর হলেও মনে রাখা জরুরী, এইভাবে যদি ই ক্যাপশনটি ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ক্ষতিও হতে পারে। সেসব লোকদের ত্বকে প্রদাহের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে যাদের ত্বক খুব সংবেদনশীল ভিটামিন ই এর সরাসরি ব্যবহার। যদি আপনি ত্বক ভালো রাখতে চান তাহলে ভিটামিন ই ব্যবহার না করে; মধু, লেবুর রসের মিশ্রণ, এবং দই লাগাতে পারেন। এতে আপনার ত্বক উজ্জ্বল হবে। ত্বক বা ব্রণের অন্যান্য দাগ কমাতে পাকা পেপের সঙ্গে লেবুর রস, মধু এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুলের নির্যাস মিশিয়ে মুখে লাগান।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি ফর্সা হওয়া যায়

আমরা বিভিন্ন কাজে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে থাকি। ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর কয়েকটি উপকার রয়েছে এর মধ্যে রূপচর্চা কাজেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। যদি আপনি ভিটামিন ই ক্যাপসুল একটা না ১৫ দিন গ্রহণ করেন সেক্ষেত্রে আপনি অনেক উপকার পাবেন। বিশেষ করে যাদের ত্বক রুক্ষ ও সূক্ষ্ম এবং ত্বকের ব্রণ আছে, যদি তারা এই ভিটামিন ই ক্যাপসুলটি ১৫ দিন একটানা গ্রহণ করে থাকে তাহলে তাদের ত্বকের ভিতর থেকে উজ্জ্বলতা এবং ফর্সা হবে। তাই আপনি যদি ফর্সা হতে চান তাহলে অবশ্যই ভিটামিন ই ক্যাপসুলটি গ্রহণ করতে পারেন।

ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম

আপনার ত্বকের চেহারা এবং স্বাস্থ্য উন্নত করার একটি কার্যকর উপায় হতে পারে ভিটামিন ই ক্যাপসুলটি। যাই হোক তাদের ব্যবহার করার সময় নির্দিষ্ট নির্দেশিকা অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদের ত্বকের যত্নের রুটিনে ভিটামিন ই ক্যাপসুল নিরাপদে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এখানে কিছু টিপস রয়েছে।

1. ক্যাপসুল প্রয়োগ করার আগে অবশ্যই আপনার ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। এটি নিশ্চিত করবে যে ত্বকের পৃষ্ঠের কোন ময়লা বা ব্যাকটেরিয়া ক্যাপসুলে প্রবেশ করবে না এবং জ্বালা সৃষ্টি করবে।

2. সাবধানে একটি সুই বা দাঁড়ালো বস্তু দিয়ে ক্যাপসুল খোচা দিবেন। তারপর বস্তুটি বের হবার পর আপনার আঙ্গুলের উপর আলতো করে নিয়ে এটি আপনার ত্বকে প্রয়োগ করবেন।

3. সম্পূর্ণরূপে শোষিত না হওয়া পর্যন্ত আপনার ত্বকে বিষয়বস্তু মেসেজ করুন। ঠোট, চোখ এবং অন্যান্য সংবেদনশীল জায়গা গুলো এড়াতে ভুলবেন না।

4. ইচ্ছা হলে অল্প পরিমাণ মহেশ্বরাইজার ব্যবহার করুন। এটি আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড এবং মিশ্রণ রাখতে সাহায্য করবে।

5. আপনার শরীরের অন্যান্য অংশে ক্যাপসুলের বিষয়বস্তু যাতে ছড়িয়ে না যায় সেজন্য প্রয়োগের পর আপনার হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন।

এই দিক নির্দেশনা গুলি অনুসরণ করে, আপনি আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য এবং চেহারা উন্নত করতে পারবেন। এবং আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনে ভিটামিন ই ক্যাপসুলগুলি কার্যকরভাবে ব্যবহারও করতে পারেন। ভিটামিন ই একটি শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা আপনার ত্বককে পরিবেশগত চাপ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাই এটি আপনার রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করা নিশ্চিত করুন।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে সতর্ক থাকুন

1. ক্যাপসুল থেকে কখনোই নখ দিয়ে তেল বের করবেন না। এতে নখের ময়লা থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।

2. যারা সোরিয়াসিস এ ভুগছেন তারা এর ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

3. স্কিন স্পর্শকাতর হলে ডাক্তারি পরামর্শ করে তবেই লাগান।

4. তৈলাক্ত ত্বক হলে বেশি ব্যবহার করবেন না।

5. রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা বা অন্যান্য ওষুধ গ্রহণকালে এলার্জি বা চুলকানি নিয়ে আসতে পারে।

6. ওভারডোজ ত্বকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া, হ্রাস ও লাল লাল ছোপ পড়তে পারে।

Read More